ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) ছাত্রীদের আবাসিক হলগুলোতে বহিরাগত কর্তৃক বারংবার চুরিসহ প্রায়ই ঘটছে অপ্রীতিকর ঘটনা। বহিরাগতদের এসব কান্ডে আতঙ্কে রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন আবাসিক ছাত্রী হলের ছাত্রীরা। এ নিয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো কার্যকরী প্রদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছেনা। অভিযোগ রয়েছে, প্রতিটি ঘটনায় তদন্ত কমিটি হলেও দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ চোখে পড়ে না।

ক্ষোভ প্রকাশ করে ছাত্রীরা বলেন, হলের ভিতরে প্রায়ই ঘটে চুরিসহ অপ্রীতিকর ঘটনা। এসব ঘটনা ঘটলেও কর্তৃপক্ষ নেয়নি শক্ত কোন পদক্ষেপ। কর্তৃপক্ষের অবহেলায় হলের ভিতরেও নিরাপত্তা নিয়ে আমরা বেশ শঙ্কিত ও চিন্তিত।

এদিকে বৃহস্পতিবার (৯ জুন) খালেদা জিয়া হলের পেছনে প্রাচীর সংলগ্ন এলাকায় দুই জন বহিরাগত যুবক ঘোরাফেরা করছিলেন। এসময় তাদের একজন ছাত্রীদের দেখে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করছিলেন। এতে ছাত্রীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। বিষয়টি জানাজানি হলে বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত কয়েকজন আনসার সদস্য তাকে ধরতে যান। ওই সময় ওই যুবক প্রাচীর টপকিয়ে মাঠের মাঝখান দিয়ে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেন। প্রায় এক ঘন্টা দৌড়ানোর পর আনসার সদস্যরা তাকে ধরতে সক্ষম হন। পরে সেখান থেকে তাকে আনসার ক্যাম্পে এনে পুলিশের হাতে সোপর্দ করা হয়।

জানা যায়, এ ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম মোহন। সে ইবি থানার পিয়ারপুর গ্রামের রেজাউলের ছেলে।

এদিকে এমন ঘটনা ঘটলেও ঘটনাস্থলে প্রক্টরিয়াল বডির কাউকে দেখা যায়নি বলে জানা গেছে।

এর আগে গত ৬ জুন আনুমানিক ভোর সাড়ে ৪টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের দক্ষিণ ব্লকের ১১০ নম্বর কক্ষে চুরির ঘটনা ঘটে। জানালার পাশে থাকা ব্যাগ থেকে বাইরে থেকে অজ্ঞাত এক যুবক টাকা চুরি করেছে বলে ধারণা শিক্ষার্থীদের। সকালবেলা হলের দেওয়ালে ছাত্রীরা অজ্ঞাত ঐ ব্যক্তির পায়ের ছাপ ও দেখতে পান বলে জানান। বিষয়টি হলের প্রভোস্ট প্রফেসর ড. শামসুল আলম কে জানালে তিনি বিষয়টি বাইরের কাউকে না জানানোর অনুরোধ করেন ওই হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের কাছে।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসিক হলগুলোতে প্রায়ই চুরি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে। এসব চুরির ঘটনায় ধরা ছোঁয়ার বাহিরেই থেকে যায় অপরাধীরা। একের পর এক চুরির ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

খালেদা জিয়া হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ফাতেমাতুজ জোহরা বলেন, আমরা অনেক সময় বিভিন্ন অপ্রীতিকর ঘটনার শিকার হই। তৎক্ষণাৎ আমরা হল কর্তৃপক্ষ ও প্রক্টরিয়াল বডিকে জানালেও তারা কোনো কার্যকরী প্রদক্ষেপ গ্রহণ করে না। অধিকাংশ সময় কোনো বিষয়ে জানানোর জন্য ফোন দিলে তারা ফোন রিসিভ করেন না।

খালেদা জিয়া হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. ইয়াসমিন আরা সাথী বলেন, ছাত্রীদের সার্বিক নিরাপত্তা দেওয়ার চেষ্টা করব। যাতে চুরিসহ অন্যান্য ঘটনা না ঘটে।

এ বিষয়ে অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় আবাসিক হল গুলোতে যেন চুরির মত ঘটনা না ঘটে এ বিষয়ে নিরাপত্তা কর্মীরা সর্বদা তৎপর রয়েছে। আমাদের চেষ্টা অব্যাহত আছে। আর যারা এসব ঘটনায় যুক্ত থাকবে তাদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি প্রদান করা হবে।